দীর্ঘ এক বছরেরও অধিক সময় পরে গত সভার এজেন্ডা বাস্তবায়ন, আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, বিভিন্ন জনসভায় সংগঠনবিরোধী বক্তব্যসহ পাঁচটি এজেন্ডা নিয়ে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকারী কমিটির সভার প্রস্তুতি ও আয়োজন সম্পন্ন শেষে আবুল হোসেন তরুন অডিটোরিয়ামে শনিবার সকাল ১১ টায় সভা শুরুর আগ মুহূর্তেই তা পণ্ড হয়ে যায়।
দুই বহিস্কৃত সদস্য জয়নাল আবেদীন ও আব্দুল মাজেদ মাষ্টারের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের তর্ক-বিতর্কের জের ধরেই পদাধিকার বলে সভাপতি উক্ত সভার মূলতবী ঘোষণা করে সভাস্থল ত্যাগ করেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে কুমারখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক আশাদুর রহমান আসাদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, কুমারখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকারী কমিটির সভা আবুল হোসেন তরুন অডিটোরিয়ামে বেলা ১১ ঘটিকার সময় উপজেলা আওয়ামীলগের সম্মানিত সদস্য গণ এবং কুষ্টিয়া-০৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ এর উপস্থিতিতে সভাপতি আব্দুল মান্নান খান ও সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান অরুন সভা শুরু করেন।শুরুতেই সাধারণ সম্পাকের একক সিদ্ধান্তে উপজেলা আওয়ামীলীগের দুইজন সদস্য বাইরে না গেলে মিটিং পরিচালনা করা হবেনা।সভাপতি ও বেশীরভাগ সদস্য একমত পোষণ না করাতে গঠনতন্ত্রের বিধি মোতাবেক সভাপতি উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকারী কমিটির সভা মূলতবী ঘোষণা করেন।
এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যকারী কমিটির সভা পণ্ডকে ঘিরে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান ও সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান অরুন পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেন।
শনিবার বেলা ১ টায় কুমারখালী রেল স্টেশন সংলগ্ন নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান খান বলেন, দীর্ঘ এক বছর পরে আজ সকাল ১১ টায় আবুল হোসেন তরুন অডিটোরিয়ামে কার্যকারী কমিটির সভা ছিল।কিন্তু সভা শুরুর আগ মুহূর্তে সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান অরুন সংগঠনের দুই সদস্য জয়নাল আবেদিন এবং আরেক সদস্য আবদুল মাজেদ মাস্টারকে বহিস্কৃত দাবি করে সভা থেকে বের করে দেওয়ার প্রশ্ন তোলেন।এনিয়ে প্রায় ৪০ মিনিট তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে সভার মূলতবী ঘোষণা করা হয়। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, দল থেকে তাদের বহিষ্কার করা হলেও পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাধারণ ক্ষমার কারণে তারা এখনও দলের সদস্য আছে। খুব তাড়াতাড়ি নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করে পুনরায় আবার সভার আয়োজন করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান আব্দুল মান্নান খান।এসময় দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে একই দিন বিকেল ৩ টায় কুন্ডুপাড়া নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সামছুজ্জামান অরুন বলেন, আগের বর্ধিত সভার কার্যবিধি অনুমোদন, বিভিন্ন ইউনিয়নের নতুন কমিটি গঠন, বিভিন্ন জনসভায় বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য সহ নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার কথা ছিল শনিবারের কার্যনির্বাহী সভায়। কিন্তু নিজের কোরাম পূরণ করার জন্য সভাপতি সাহেব বহিস্কৃত দুই সদস্যকে সভায় উপস্থিত করান।আমি বহিস্কৃত নেতাদের বের করে সভা শুরুর প্রস্তাব জানালে সভাপতির সাথে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে পদাধিকার বলে সভা পণ্ড করে চলে যান সভাপতি আব্দুল মান্নান খান। তিনি আরো বলেন,সভা বন্ধের জন্য পুলিশসহ নানা ইস্যু খুঁজছিলেন সভাপতি সাহেব। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির উপস্থিতিতে সহ-সভাপতি জালাল খাঁ’র সাংগঠনিক বিরোধী বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান সংবাদ সম্মেলনে সাংসদ ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ।
এদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের দুগ্রুপের দ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসলে শহর এলাকায় দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা লক্ষ্য করা যায়।সভা পণ্ডের পর উপজেলা চত্ত্বর ও খাদ্য গুদামের আশেপাশে দুগ্রুপের কয়েকশত নেতাকর্মী জড় হয়।পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।