আগামী বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউনে যাওয়ার চিন্তা করছে সরকার। জরুরি সেবা ছাড়া সরকারি-বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে। কোনও যানবাহনের চাকা ঘুরবে না। পোশাক ও সকল শিল্প কারখানাও বন্ধ থাকবে।
শুক্রবার (০৯ এপ্রিল) দুপুরে গণমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
এর আগে সকালে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের জানান, দেশে করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার। সেই সঙ্গে বাড়ছে জনগণের অবহেলা ও উদাসীনতা। এমতাবস্থায় জনস্বার্থে আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনের বিষয়ে সক্রিয় চিন্তা-ভাবনা করছে সরকার।’
চলমান এক সপ্তাহের লকডাউনে জনগণের উদাসীন মানসিকতার কোনও পরিবর্তন হয়নি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যু বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে গত ২৯ মার্চ ১৮ দফা জরুরি নির্দেশনা জারি করা হয়। ৩১ মার্চ থেকে গণপরিবহনে ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহন শুরু হয়। ১ এপ্রিল থেকে নৌপথেও অর্ধেক যাত্রী পবিবহন কার্যকর হয়। অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখার নির্দেশনা কার্যকরে গণপরিবহনে ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো হয়।
করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গেল বছর ২৩ মার্চ প্রথমবার ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। শুরুতে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ‘ছুটি’ ঘোষণা করেও পরে দফায় দফায় সেই মেয়াদ মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেসময় সব অফিস-আদালত, কল-কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে সারা দেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ছুটির মধ্যে সবকিছু বন্ধ থাকায় সেই পরিস্থিতি ‘লকডাউন’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
কিন্তু টানা সাধারণ ছুটির কারণে নিম্নবিত্তের জীবন-জীবিকা ও দেশের উৎপাদন ব্যবস্থা অস্তিত্ব সংকটে পড়লে বিভিন্ন মহলের দাবির মুখে সরকার ৩১ মে’র পর থেকে ধাপে ধাপে বিধিনিষেধ শিথিল করতে থাকে। বছরের শেষে এসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাড়া আর সবকিছুতেই কড়াকড়ি উঠে যায়।
তবে চলতি বছরের শুরুতে করোনার সংক্রমণ অনেকটা কমে এলেও মার্চ মাসের শুরু থেকেই ধীরে ধীরে আবারও বাড়তে থাকে। মাসের শেষ সপ্তাহ নাগাদ তা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। আর এপ্রিলের গত ৮ দিনে প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যু আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।