বেড়ার ঘরে পলিথিনের ছাউনী দিয়ে অন্যের জমিতে স্ত্রী পূর্নিমা ও সন্তান নিয়ে এক ঘরেই বসবাস করে আসছেন অসহায় সুশান্ত হালদার।
মেঘলা রাতে বৃষ্টির প্রতিটি ফোটার শব্দ শুনে এবং পোকামাকড়ের সাথেই তাদের রাত কাটে। ঘরের দেয়াল নেই। পলিথিনের ছাউনি দিয়ে কুঞ্চি আর মাটি-বেড়ার ঘরে সাপ, ব্যাঙ আর কেঁচোর সঙ্গে নিত্য যুদ্ধ করতে হয় অসহায় সুশান্ত হালদারের। সুশান্তর এ ঘরটি দেখলেই যেনো চোখে পানি চলে আসে। এমন পরিবেশে বসবাস করা মানুষ বর্তমানে খুঁজে পাওয়া কঠিন। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুর্নবাসনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা জমি ও ঘর উপহার দিলেও সুশান্তর কপালে জোটেনি সরকারি ঘর। জীবন যুদ্ধের মহানায়ক সুশান্ত হালদারের বসবাস মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাইপুর ইউনিয়নের হাড়িয়াদহ গ্রামে।
সুশান্তর বাবার বাড়ি মেহেরপুর শহরে হলেও, সেখানেও তার তেমন জমি নেই। এ কারণে প্রায়ই ২০ বছর যাবত শ্বশুর বাড়ি হাড়িয়াদহ গ্রামে তার বসবাস। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার শ্বশুরেরও কোন জায়গা-জমি নেই। শ্বশুর সুধীর হালদার মারা যাওয়ার পর শাশুড়ী এখন অন্যের জমির উপর বাস বাগানে বসবাস করে আসছেন। তার শাশুড়ী ভিক্ষা করে জীবন-যাপন করে আসছেন।
সুশান্ত মাছ শিকার করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু এলাকায় নদী-নালা, খাল-বিল তেমন নেই। যদিও কয়েকটি ছোট নদী রয়েছে। ওই নদীতে শুকনো মৌসুমে পানি না থাকায় মাছ শিকারও তার তেমন হয়না। ফলে অন্যের কৃষি ক্ষেতে দিন মজুরির কাজ করে সংসার চালাতে হয় তাকে। পরিবারে রয়েছে ৪ জন সদস্য।
এই বেড়ার ঘরে কোন রকমে বসবাস করা সুশান্ত গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রাণের আকুতি মাথা গোঁজার ঠাঁই চাই।
সুশান্তর স্ত্রী পূর্ণিমা হালদার জানান, লোক মারফত জানতে পেরেছি, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে পুর্নবাসনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা মানবতার মা শেখ হাসিনা জমি ও ঘর উপহার দিচ্ছেন। ইউএনও স্যারের মাধ্যমে বহু মানুষ ইতিমধ্যে জমি ও ঘর পেয়েছে, তারা সেখানে বসবাস করছে, আপন ঠিকানা পেয়েছে। অনেকে জমি ও ঘর পেলেও সেখানে বসবাস করে না। ফলে পতিত অবস্থায় আছে। আর আমরা ঘরের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছি। আমি অনেকের কাছে বলেছি। কিন্তু কেউ আমাদের দুঃখ কষ্ট বোঝেনি। আমরা অসহায় গৃহহীন মানুষ, তাই ইউএনও স্যারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মানবতার মা শেখ হাসিনার কাছে মাথা গুজার ঠাঁই চাই। তা না হলে খোলা আকাশের নীচে থাকা ছাড়া উপায় থাকবে না।
পূর্ণিমা আরো বলেন, কেউ যদি কয়েকটি ঢেউটিন দিতেন। তাহলে, ভাঙ্গা ঘরের উপর টিন দিয়ে কিছুটা হলেও বৃষ্টির পানিতে থেকে রক্ষা পেতাম।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী খানাম বলেন, অসহায় পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।