মেঘ না চাইতে বৃষ্টি তাই হঠাৎ দেখা নীলার সাথে নিলয়ের লন্ডনের একটি শপিং মলে । তখন তার সাথে ছিল তার বোনের ছোট ছেলে । হ্যালো নীলা বলে তাকিয়ে রহিল নিলয় নীলার দিকে এবং নীলা ও তার দিকে তাকিয়ে রহিল । তখন ছিল লাঞ্চের সময় তাই জিজ্ঞেস করল নিলয় তুমার কি লাঞ্চ করা হয়েছে ? নীলা বলল না । তখন নিলয় বলল তাহলে চলো কোন একটি জায়গাতে যাই লাঞ্চ করতে। নীলা বলল হ্যা চলো। তারা দুইজন গেল নীলার প্রিয় এক ফাস্টফুডের দোকানে । নীলা অর্ডার করল উভয়ের জন্য তার পছন্দের খাবার। খুব ভালো সময় কাটছে । এর মধ্যে হঠাৎ নিলয় বলল আমরা অনেকদিন ধরে একে ওপরকে জানি ? নীলা বলল হ্যা। তাহলে কি আমরা আরও ঘনিস্ঠ হতে পারি না ? নীলা বলল পারি । তবে আমার শর্ত আছে ? নিলয় বলল কি শর্ত। শর্ত হল আমাকে কেউ পেতে হলে খুব বেশি ভালবাসতে হবে। কোন কিছুর বিনিময়ে নয় শুধু ভালোবাসার বিনিময়েই আমাকে পাওয়া সম্ভব । তারপর ভালোবাসা আরও বাড়তে শুরু হল নিলয়ের । ভালোবাসার বাজিতে হারবনা এই পণ নিয়ে শুরু করল নীলাকে ভালোবাসা। নীলার ও ভালোবাসা কম ছিলনা। এক ঘণ্টার ভিতরে নিলয় নীলার খবর না নিলে নীলা বলতো তুমি কি আমায় ভুলে গেছো। একদিন তারা প্ল্যান করল ঘুরতে যাবে লন্ডন আই এর আশেপাশে । তখন লন্ডনের বিকাল। হাতে হাত রেখে দুজন লন্ডন আই এর পাশের ব্রিজ এর উপর দিয়ে হাটতে থাকল আর মাঝে মাঝে ছবি তুলল। নীলার চোখে ছিল ভালোবাসা তাই কখনো কখনো সে নিলয়কে কাছে টানতে ও কৃপণতা করেনি। তারপর তারা চলে গেল অন্য একটি জায়গাতে মানে ট্রাফালগার স্কয়ারে সেখানে পানির ঝর্নার পাশে ছবি তুলা এবং মায়াবী চোখে একজন আরেকজন কে দেখা অন্যরকম অনুভূতি ছিল । এক সময় ভালোবাসার সুলক্ষণা পরিপূর্ণ হল । নীলা ও তা বুঝতে পারল । তারপর শুরু হল সংসার । একটি স্বল্প সময়ের সংসারে ভুলভ্রান্তি থাকা স্বাভাবিক বিষয় ছিল । নিলয়ের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব ছিল নীলাকে খুশি করা বা খুশি রাখা । তাই সে সব কিছুকে পিছনে রেখে নীলার সুখের জন্য ভেবেছে । এখানে হয়তো তার অনেক আত্মীয় স্বজনের কথা এসেছে , আসতেই পারে তবে কেন এখানে নীলা রাগ করবে এটা নিলয়ের প্রশ্ন ? কারণ বিষয়গুলি বলা হয়েছিল তার একটু বিশ্রামহীন জীবনে বিশ্রামের জন্য । আর এখানে তো তাকে ভালোবাসার বিষয় ছিল তাই যদি অতিরিক্ত হয়ে যায় তবে তো তা তার জন্য করেছিল নিলয় । তাহলে এখানে সে কিংবা কেউ যদি মনে করে এটি ভালো কাজ ছিল না,তাহলে প্রসঙ্গ ক্রমে বলা যায়, সেটা ছিল তাদের ভুল চিন্তাভাবনা । তাছাড়া নীলাকে যদি তার আত্মীয়-স্বজন সত্যিকারের ভালোবাসতো তবে তো এটি তাকে বুঝানো উচিত ছিল যে, এটি তোমার ভালোর জন্য করা হচ্ছে যদিও বিষয়গুলি আমাদের বিরুদ্ধে যাচ্ছে । তাই অবস্হাদৃস্টে বলা যায় নীলাকে সবাই ঠকাচ্ছে, কিন্তু তার বোধোদয় হচ্ছে না । হয়ত নীলার আপনজনরা নিলয়ের আসল কথাগুলি নীলার কাছে না বলে তার উল্টা কথা বলে নীলার রাগ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এই অবস্তায় নীলা এবং নিলয় এখন পৃথক । হয়ত তারা আর এক হতে পারবেনা কিছু অশুভ চিন্তার কারণে । কিন্তু নিলয় মনে করছে, নীলার কিছু ভুল চিন্তার কারণে এই অবস্তার সূত্রপাত হয়েছে ,নিলয় মনে করছে নীলার এমন চিন্তা হতে পারে যে,তার ব্যক্তি স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ হয়েছিল বা হবে । তা সম্পূর্ণ ভুল নিলয় মনে করে । কারণ, নিলয় তো একটি শিক্ষিত ছেলে তাকে বললে সে শুধরে নিতে পারে সব কিছু । তাছাড়া অর্থনৈতিক সুখ হয়ত সে বেশি পাবেনা চিন্তা করেছে নীলা । এটাও নীলার ভুল চিন্তা নিলয় মনে করে। কারণ, তখন তাদের একটা বেশি খরচের সময়ের পর এই সময়টা পার করছিল তাই একটু টানাটানি স্বাভাবিক ছিল। হয়ত নীলার চিন্তা ছিল তার ইচ্ছামত সে চলবে কিন্তু সে যদিও সেটা বলা উচিত ছিল নিলয়কে কিন্তু বলেনি । এরকম অনেক কিছু থাকে সাংসারিক জীবনে এটা বা এ বিষয়টি আমার পছন্দ নয়, কিংবা তুমি এটি করবেনা এ রকম কিছু আপত্তি থাকলে বলা উচিত হলেও নীলা বলেনি নিলয়কে । এই যুগল যেহেতু বিদেশে থাকে তাই কিছু পরিবর্তন আসলে স্ট্যাটাস এ হোম অফিসকে তাৎক্ষণিক জানাইতে হয় তাই সেটা জানানোর জন্য দুজন একসাথে ব্যারিস্টারের কাছে গিয়ে বলেছে ভাই কাজটি করে দেন । সেখানে যদি নীলার কোনরকম আপত্তি ছিল সেটা সে বলতে পারতো নিলয়কে, বা আরও একটু পরে কাজটি করি এটা ও বলতে পারতো কিন্তু বলেনি সে , এখন তার প্রশ্ন এত তাড়াতাড়ি কেন করল নিলয় এ কাজটি ? এ রকম কিছু বিষয়ে সন্দেহ এসেছে এখন আর বেড়েছে তাদের দূরত্ব। তবে চিন্তা করা যায় এগুলি যদি নীলা আন্তরিক হয়ে বলে নিলয়কে তোমাকে কিছু জিনিস বাদ দিতে হবে আর কিছু অভ্যাস বদলাতে হবে । তাহলে কি নিলয় এসব অস্বীকার করতে পারে ? না । তাই কেন একটি পবিত্র সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটবে এভাবে অতি ক্ষুদ্র বিষয়ে, এই প্রশ্ন আজ ঘুরছে আকাশে …… । কে দিবে এর সমাধান নিলয় জানেনা। কারণ এখানে মেয়েদের মনের উপর কেউ জোর চালাতে পারেনা । তাই এখন নীলার সুমতি হোক এটাই নিলয়ের মনে প্রাণে চাওয়া । আর এরকম একটা ভালো সম্পর্ক সঠিক চিন্তা ভাবনার অভাবে নষ্ট হয়ে যাবে তা নিলয় ভাবতে পারেনা, এটাই স্বাভাবিক । তাই এখন নীলার জন্য অপেক্ষা ছাড়া নিলয়ের আর কিছু করার নেই । সে জানেনা তার নীলা কখন ফিরবে তার কাছে কিংবা কখনো আর ফিরবে কিনা ? তাই সমাজের মানুষের দায়বদ্ধতা থেকে কিংবা তার প্রভুর উসিলায় তাদেরকে কেউ সাহায্য করতে আসবে এটাই তার আশা কিংবা সান্ত্বনা ।
লেখক: আজিজুল আম্বিয়া
যুক্তরাজ্য প্রবাসী ।